বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ইতিহাস

এসএসসি(ভোকেশনাল) - রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
15
15

২.২.১ বিদ্যুৎ আবিষ্কারের ইতিহাস

গ্রীক দার্শনিক স্মীথ হেলস (Smith) লক্ষ্য করেন যে, যখন কোন লোমশ বৰ্ম দিয়ে অ্যাম্বরকে (Amber যা পাইন গাছের শক্ত আঠা) ঘর্ষণ করা হয় তখন তুষের ছোট ছোট টুকরাকে অ্যাম্বর আকর্ষণ করে। তিনি ধারণা করেন লোমশ বর্ষ বর্ষণের ফলে উৎপন্ন অদৃশ্য শক্তি তুষের টুকরাকে আকর্ষণ করে। এ অদৃশ্য শক্তিকে বিদ্যুৎ বলে। সাধারণতঃ উৎপন্ন স্থানেই অবস্থান করে এই বিদ্যুৎ ধ্বংস হয় তাই একে স্থির বিদ্যুৎ বলা হয়। ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে ডঃ গীলবাৰ্ট (Dr. Gilbert) পরীক্ষার মাধ্যমে দেখেন শুধু অ্যাম্বর নয় বরং কাঁচ, রাবার, গাটা পাচার, এবোনাইট, গন্ধক, ইত্যাদি ঘষলেও পূর্বরূপ ক্রিয়া সংঘটিত হয় । এই প্রক্রিয়াকে তড়িতাহিতকরণ বলে। যে বস্তুতে বিদ্যুৎতাহিত হয় তাকে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ গ্ৰন্থ বা আহিত বা চার্জিত বস্ত্র বলে। যার কারণে কোন বস্তুতে স্থির তড়িৎ বা তড়িৎক্ষেত্রের সঞ্চার হয় এবং যার গতিতে তড়িৎ প্রবাহ ও চৌম্বকত্বের সৃষ্টি হয় তাকে আধান বা চার্জ (Charge) বলে। ১৭৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসী বিজ্ঞানী ডু ফে (Du. Fay) প্রমাণ করেন যে বিভিন্ন বস্তু হতে উৎপন্ন চার্জের প্রকৃতি এক রকম নয়। একটা অপরটির বিপরীত । তাই চার্জ ২ প্রকার যথা-১। ধনাত্বক চার্জ (Positive Charge) ২। ঋনাত্বক চার্জ (Negative Charge) 

(বিদ্যুৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমাদের পরমানুর গঠন ও বিন্যাস জানতে হবে)

 

পরমানুর গঠন ও বিন্যাস 

ইলেকট্রন তত্ত্ব (Electron Theory)

রসায়নবিদ ও পদার্থবিদগনের মতে পদার্থ মাত্রই অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনার সমষ্টি। কোন পদার্থ কঠিন, তরল, বায়বীয় যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন তা অগণিত অতি সুক্ষ্ণ কণা দিয়ে গঠিত ।

অণুর সংজ্ঞা (Definition of Mole ) 

মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের ধর্মাবলী অক্ষুন্ন রেখে স্বাধীনভাবে অবস্থান করতে পারে তাকে অণু বা (Mole) বলে। এক কথায় বলা যায়, মূল পদার্থের গুণাগুণ বিশিষ্ট পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে অণু বলে। একটি অণু আবার অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত। তাদের এক একটিকে পরমাণু বলে।

পরমাণুর সংজ্ঞা 

মৌলিক পদার্থের তড়িৎ নিরপেক্ষ ক্ষুদ্রতম কণা যা সাধারণত স্বাধীন অস্তিত্বের অধিকারী নয় কিন্তু রাসায়নিক পরিবর্তনে অংশ গ্রহণ করতে পারে তাকে পরমাণু (Atom) বলে। আবার একটি পরমাণুকে ভাঙ্গলে বা বিশ্লেষণ করলে দুই ধরণের কণিকা পাওয়া যায় ।

১. স্থায়ী মূল কণিকা: যে সব মূল কণিকা সব মৌলের পরমাণুতে থাকে, তাদেরকে স্থায়ী মূল কণিকা বলে । স্থায়ী মূল কনিকা তিনটি-

ইলেকট্রন (Electron): সব ধরণের পরমাণুতে কম বেশী ইলেকট্রন থাকে । এটি নেগেটিভ চার্জ যুক্ত, এটিকে ‘e’ প্রতীক দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থান করে। (চিত্র ২.২-দ্রষ্টব্য)

প্রোটন (Proton): প্রোটন পজেটিভ চার্জ যুক্ত। প্রোটনের বৈদ্যুতিক চার্জের পরিমান ইলেকট্রনের চার্জের সমান। এটির প্রতীক 'p '। এটি নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে। (চিত্র ২.২- দ্রষ্টব্য) 

নিউট্রন (Neutron): ইলেকট্রন ও প্রোটনের মত নিউট্রনও একটি মৌলিক কনিকা বা কণা । নিউট্রনের কোন চার্জ নেই, অর্থাৎ তড়িৎ নিরপেক্ষ। এটির প্রতীক ‘n' । এটি পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে । (চিত্র ২.২- দ্রষ্টব্য)

 

২.অস্থায়ী মূল কণিকা: যে সব মূল কনিকা কোন কোন মৌলের পরমাণুতে খুবই কম সময়ের জন্য অস্থায়ীভাবে থাকে, তাদেরকে অস্থায়ী মূল কণিকা বলে। যেমন- পাইওন, মিউওন, নিউট্রিনো ও মেসন প্রভৃতি ।

নিউক্লিয়াস

পরমাণুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিউক্লিয়াস। এটি প্রোটন ও নিউট্রন নিয়ে গঠিত। 

পরমাণুর প্রকারভেদ 

ইলেকট্রনের পরিমান অনুযারী পরমাণু দুই প্রকার

  • নেগেটিভ ধর্মী পরমাণুঃ যে পরমাণুর কক্ষপথে ইলেকট্রনের সংখ্যা প্রোটনের সংখ্যার চাইতে বেশী তাকে নেগেটিভ ধর্মী পরমাণু বলে।
  • পজিটিভ ধর্মী পরমাণুঃ যে পরমাণুর কক্ষপথে প্রোটনের সংখ্যা ইলেকট্রনের সংখ্যার চাইতে বেশী তাকে পজিটিভ ধৰ্মী পরমাণু। 

 

Content added By
Promotion